নীরাজন

ভালবাসি তোমায় (ফেব্রুয়ারী ২০১৪)

কেতন শেখ
  • ৭৩
বুড়া রিকশাওয়ালারা সাধারণত একটু বেশী কথা বলে।

তমালের ধারণা অল্পবয়সী রিকশাওয়ালারা স্বল্পভাষী হয়। সেসব রিকশাওয়ালারা রিকশায় উঠার সময় বিরস মুখে বলে, ‘বৃষ্টি আইতাছে, পর্দা নাই কইলাম, ভিজ্জা যাইবেন’। এদের কথায় এমন একটা ভাব থাকে যেন তার রিকশায় না উঠলেই সে খুশি। তমাল একবার আজীমপুর থেকে রিকশায় উঠলো ধানমন্ডিতে যাবে বলে। নিউমার্কেট পার হতেই রিকশাওয়ালা হঠাত করে রিকশাটাকে রাস্তার একটা সাইডে রেখে কোথাও হাওয়া হয়ে গেলো। প্রায় বিশ মিনিট পরে রিকশাওয়ালাটা এসে রিকশা চালানো শুরু করলো। তমাল বিরক্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো, কি ব্যাপার, কোথায় গিয়েছিলে ?

রিকশাওয়ালাটা সেই প্রশ্নের উত্তরে কিছু বললো না। দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করার পর নিরাসক্ত কণ্ঠে বললো, আসরের নামাজ পড়তে গেছিলাম। আমি জামাতে নামাজ পড়ি।

কেউ জামাতে নামাজ পড়তে গিয়েছিলো এটা শুনে রাগ করা যায় না। তমাল বহুকষ্টে রাগ সামলে বললো, জামাতে নামাজ পড়ো ভালো কথা ... কিন্তু আমাকে একটু বলে যাবে তো! আমি না হয় অন্য একটা রিকশা নিয়ে নিতাম।

রিকশাওয়ালাটা এই কথা শুনে কিছুই বললো না। একটা নির্লিপ্তভাব নিয়ে রিকশা চালাতে থাকলো। তমালের সেদিন ধানমন্ডিতে পৌঁছাতে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিলো। সেই বিশ মিনিট তো আছেই, এরপর একটা মিছিলের কারণে ট্র্যাফিকেও অনেক দেরী হয়ে গেলো। ঢাকা শহরে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গাতে যাওয়ার কিছু টাইমিং আছে। তমাল টাইমিং ঠিক করেই রওনা হয়েছিলো। কিন্তু রিকশাওয়ালার আসরের নামাজ জামাতে পড়ার কারণে টাইমিং-এ গন্ডগোল লেগে গেলো। মিছিলের আটকে পড়ায় আরও আধা ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছিলো। ধানমন্ডি পৌঁছানোর পরে রিকশাওয়ালাকে আরেকবার ধমক দেয়ার পরেও সে নিশ্চুপই ছিলো, কোনো কথা বলেনি।

কিন্তু আজকের রিকশাওয়ালাটা সেরকম না। সে বয়স্ক এবং বাচাল প্রকৃতির। রিকশা চালানোর সময় সে সমানে বকবক করে যাচ্ছে। কি কি সব বলছে সেটা তমাল মন দিয়ে শুনছেও না। তমালের আজকে একটা নিরাসক্ত আর চুপচাপ টাইপের রিকশাওয়ালার প্রয়োজন ছিলো। কারণ আজকে ওর সাথে আরিশা আছে। আজকে এমন একটা রিকশাওয়ালার প্রয়োজন ছিলো যে প্রশ্ন করলেও কোনো উত্তর দিবে না।

সমস্যার ব্যাপার হচ্ছে যে এই রিকশাটা তমাল নিজে ঠিক করেনি, আরিশা নিয়ে এসেছে। তমাল রিকশায় উঠার সাথেসাথেই রিকশাওয়ালাটা বললো, বাহ, ভাইজানতো দেখতে খুউব সুন্দর! এক্কেরে নূরানী চেহারা, মাশাল্লাহ! আমার আম্মাজানও দেখি সুন্দর! কি সুন্দর জোড়া!

তমাল প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে লক্ষ্য করলো আরিশা মুখ টিপে হাসছে .... রিকশাওয়ালাটা খুব অদ্ভূত সম্বোধন দিয়ে কথা শুরু করেছে। আরিশাকে আম্মাজান আর তমালকে ভাইজান বলছে। আবার ওদের দুইজনকে জোড়াও বলছে। এই রিকশাওয়ালা নিশ্চই সারা রাস্তায় বকবক করে রিকশা করে যাওয়ার সব আনন্দ মাটি করে দিবে।

আজকে ভ্যালেন্টাইনস ডে। আরিশা অপরূপ সাজে সেজে এসেছে। মেরুন রঙের পাড় দেয়া একটা অফ ওয়াইট শাড়ি পরেছে। সাথে ছোট হাতা আর বড় গলার সাদা ব্লাউজ, মেরুন পাথরের হার আর সেটার ম্যাচিং করা ঝুলানো কানের দুল। গাঢ় কোনো একটা রঙে চোখ এঁকেছে। ওরা ঢাকা ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বেড়াতে যাচ্ছে। তমাল আইবিএ থেকে পাস করে চাকরী করছে আজকে প্রায় দুই বছর। কিন্তু ফেব্রুয়ারী মাস আসলেই ও আরিশাকে নিয়ে দুই-একবার ক্যাম্পাসে যায়। আরিশাও একই ক্যাম্পাসের ছাত্রী ছিলো, তাই সেখানে বেড়াতে ও নিজেও খুব পছন্দ করে। আর যখনই ওরা ক্যাম্পাসে বেড়াতে যায়, রিকশা করেই যায়। রিকশা করে যাওয়ার ইচ্ছাটাও আরিশারই ... কিন্তু আজকে রিকশাওয়ালার মতিগতি দেখে মনে হচ্ছে আরিশা নিজেও কিছুক্ষণের মধ্যে বিরক্ত হয়ে যাবে।

আরিশাকে নিয়ে বেড়াতে বের হলে তমাল সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকে। আরিশা এমনিতে খুব হাসিখুশি থাকে, অনেক গল্প করে। কিন্তু ওর মুড একবার খারাপ হলে সেদিনের বেড়ানো শেষ। আরিশা রাগ করলে সেই রাগ ভাঙতে দুই-তিনদিন লাগে। তমালের অনেক প্রচেষ্টাও লাগে। আজকের ভ্রমণে রিকশাওয়ালার বকবকানির কারণে আরিশার মুড খারাপ হওয়ার একটা সমূহ সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এই রিকশাটা বদলানো যাচ্ছে না, কারণ আরিশা এটা নিয়ে এসেছে। এখন যদি তমাল রিকশা বদলানোর কথা বলে, আরিশা ভ্রু কুঁচকে বলবে, ‘কেন ... এই রিকশায় কি সমস্যা ?’ এরপর ও নিশ্চিত রাগ করবে। এরকম কিছু হয়ে গেলে ভ্যালেন্টাইন ডে সেখানেই শেষ। এরকম কিছু হতে দেয়া যাবে না। তমালের আজকে আরিশার সাথে অনেক কথা আছে। ওকে নিয়ে অনেক সময় কাটানোর ইচ্ছা আছে। আজকে আরিশার মুড ঠিক থাকাটা খুব দরকার।

তমাল আরিশার দিকে তাকিয়ে বললো, দেখো, বাতাসটা কি সুন্দর, তাই না!

আরিশা কিছু বলার আগেই রিকশাওয়ালাটা অতি উত্সাহ নিয়ে বললো, হ ভাইজান, এত্তো সুন্দর মানুষ লগে থাকলে হাওয়া পানি বাতাস সবই সুন্দর লাগে। হে হে হে।

আরিশা বিরক্ত কণ্ঠে বললো, আপনি কথা বলছেন কেন ? আপনাকেতো কিছু বলা হয়নি। আপনি ঠিকমতো রিকশা চালান।

তমালের বুক ধড়ফড় করছে। খুব সম্ভবত আরিশার মুড খারাপ হওয়া শুরু হয়েছে। এখন তমাল কোনো কথা বললেও আরিশা বিরক্ত হতে পারে। এমন কিছু হলে ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আরিশা ক্লান্ত হয়ে যাবে। শারীরিক ক্লান্তির জন্য না, মনে মনেই ক্লান্ত হয়ে যাবে। তখন ও বেশীক্ষণ সেখানে থাকতে চাইবে না। ভ্যালেন্টাইনস ডে তখন ঝগড়া ডে-তে রূপান্তরিত হবে। আরিশা তেমন কোনো কারণ ছাড়াই একটা ঝগড়া করবে। সেই ঝগড়া মিটমাট করতে তমালকে অনেক কসরত করতে হবে। আজকে ঝগড়া হলে আজকেই আরিশার রাগ ভাঙার কোনো সুযোগ নেই। ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে হওয়া ঝগড়া দেশের জাতীয় ইস্যুর মতো বড় একটা ব্যাপার .... কাজেই সেই ঝগড়ার কারণে হওয়া রাগের তীব্রতাও ব্যাপক। আর ঝগড়াতে তমালের কোনো ভূমিকা না থাকলেও আরিশার রাগ ভাঙাতে তমালকেই বিশেষ ব্যবস্হা নিতে হবে। তবে বিশেষ ব্যবস্হা নিয়েও পুরোপুরি শান্তি ফিরিয়ে আনা যাবে না। সেই রাগ ভাঙলেও বাকি জীবনে বারবার শুনতে হবে যে ভ্যালেন্টাইন ডে-তে তমাল আরিশার সাথে ঝগড়া করেছিলো। এরপর হওয়া সব রাগের সাথে ইতিহাসের পাতা থেকে সেটাও উঠে আসবে। কি সমস্যা!

রিকশাওয়ালাটা নিজের মনেই বলতে থাকলো, আইজকা আপনাগো ভালোবাসা দিবস, তাই না ভাইজান ? সব যুবকেরা আইজকা তাদের ভালোবাসার মানুষরে লাল লাল গোলাপ দিবো। একসময় আমরাও এমন করতাম .. তয় এমন দিবস-মিবস ছিলো না। ফাল্গুন মাসের এক তারিখেই আমরা এমন ফুল দিতাম। হেইদিনের অবশ্য এমন কুনো নাম আছিলো না।

তমাল কি করবে বুঝে উঠতে পারলো না। এখন রিকশাওয়ালাটাকে ওর একটা ধমক দেয়া প্রয়োজন, কিন্তু আরিশার ভয়ে সেটা করা যাচ্ছে না। এখন ধমক দিলেই আরিশা শীতল কণ্ঠে বলবে, কি ব্যাপার, তোমার কার্টেসি কোথায় গেলো! এসব কি অভদ্রলোকের মতো আচরণ!

তমাল নিজের অজান্তেই শার্টের পকেট থেকে সিগারেট আর লাইটার বের করলো। আজকে ভ্যালেন্টাইনস ডে। ফেব্রুয়ারি মাসের বিকালের হালকা রোদ, আরামের বাতাস বইছে। ওদের রিকশার হুড খোলা। তমালের পাশে অপরূপা এক তরুণী, তার হাতে তমালের দেয়া ছয়টা টকটকে লাল গোলাপ। এমন চমত্কার একটা পরিবেশ আর পরিস্হিতিকে একজন বুড়া রিকশাওয়ালার বকবকানির কারণে নষ্ট হতে দেয়ার কোনো মানে হয় না। আরিশার মুড খারাপ যাতে না হয় সেটার জন্য এখনই ব্যবস্হা নিতে হবে। সেটার জন্য সিগারেট ধরিয়ে প্রথমে মাথা ঠান্ডা করতে হবে। মাথা ঠান্ডা করার জন্য নিকোটিনের কোনো তুলনা নেই। আর প্রেমের পাঁচ বছরে তমালের সিগারেট খাওয়া নিয়ে আরিশা কখনোই কিছু বলেনি। কাজেই ধরে নেয়া যায় যে তমালের সিগারেট খাওয়া নিয়ে আরিশার কোনো আপত্তি নেই।

তমালের বন্ধু সামি সবসময় বলে, তুই আরিশাকে বেশী ভয় পাস ... টেক কন্ট্রোল ম্যান! ওকে এরকম ভয় করতে থাকলে তুই একসময় একটা মুরগী হয়ে যাবি। এরপর থেকে যখন ভয় হবে, সবচেয়ে প্রথমে আরিশার সামনে একটা সিগারেট ধরাবি, লাইক এ স্টাড। এরপর পৃথিবীর সবকিছুকে উপেক্ষা করে প্রেম করায় মন দিবি। তোর চারদিকে যা খুশি হোক, তুই তাকাবি শুধু আরিশার দিকে। ওর চোখের দিকে তাকিয়ে গল্প-উপন্যাস টাইপের ডায়লগ দিবি। এরকম না করলে তোর কন্ট্রোলে কোনোদিনই কিছু আসবে না।

তমাল সিগারেট ধরিয়ে একরাশ ধোঁয়া ছেড়ে আরিশার দিকে তাকিয়ে বললো, ওর কথা বাদ দাও তো। ইগনোর হিম। এসো আমরা কথা বলি। তুমি কি জানো তোমাকে আজকে অপরূপা সুন্দরী লাগছে ? আমার কাছে আসার আগে আয়নাতে নিজেকে দেখেছো ?

এবারও আরিশা কিছু বলার আগে রিকশাওয়ালাটা বললো, আহা রে, কি সুন্দর কথা! ভালোবাসা দিবসে কত্তো সুন্দর কথাটা কইলেন ভাইজান! বাহ বাহ!

আরিশার ভ্রু কুঁচকে যাচ্ছে। তমালের আবার বুক ধড়ফড় করা শুরু হয়েছে। ঠিক এই মুহূর্তে রিকশাওয়ালাটাকে একটা কড়া ধমক দেয়া প্রয়োজন, কিন্তু আরিশার ভয়ে সেটাও দেয়া যাচ্ছে না। রাস্তাঘাটে ধমকাধমকি করা ওর একেবারেই পছন্দ না। তমাল এখন রিকশাওয়ালাটাকে কড়া করে কিছু বললেও আরিশা রেগে যেতে পারে।

আরিশা চোখমুখ শক্ত করে তমালের দিকে তাকিয়ে থেকেই রিকশাওয়ালার উদ্দেশ্যে বললো, এইযে শুনুন, আপনি দয়া করে একটু চুপ থাকবেন ? আপনার কথা শুনে আমার মাথা ধরে যাচ্ছে।

তমাল খুব সাবধানে মনে মনে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। মনে হচ্ছে আরিশা তমালের কোনো ব্যাপারে রাগ করেনি, ওর রাগটা এখনও রিকশাওয়ালার উপরে। সেরকম কিছু হলে সামনে কিছু ভালো সময় আশা করা যায়। ওদের রিকশা এখন কাঁটাবন রোডে আছে। এর একটু পরেই ফুলার রোড আসবে। ফুলার রোডে নেমে গেলে এই রিকশাওয়ালাটার বকবকানি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। তমালের মনে হচ্ছে রিকশা থেকে নামলেই আরিশার মুড ঠিক হয়ে যাবে। এরপর ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে ওর হাত ধরে হাঁটলে আরিশার মন অনেক ভালো হয়ে যাবে। সন্ধ্যা হতে খুব বেশী দেরী নেই। বিকালের আলো মিলিয়ে গেলে আরিশা হয়তো হাঁটতে হাঁটতে তমালের আরও কাছে চলে আসবে। একসময় তমালের কাঁধে মাথা রেখে হাঁটবে। দিনের ঝকঝকে আলোতে আরিশা এমনটা কখনও করে না। আলো সরে গিয়ে একটু অন্ধকার নামলেই ও এমনটা করে। তমালের জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত হচ্ছে আরিশা যখন ওর কাঁধে মাথা রেখে হাঁটে। ফুলার রোডে রিকশা থেকে নেমে গেলেই সেই মুহূর্তটা কাছে চলে আসবে।

রিকশাওয়ালাটা ঘাড় ঘুরিয়ে হাসিহাসি মুখে বললো, ও আম্মা, রাগ করেন ক্যান। এমন ভালোবাসার সময় আমার আর আমেনা বেগমেরও ছিলো ... আমরাও রিকশা কইরা ঘুরতাম। তয় আইজকার দিনে ঘুরতাম না। এইসবতো আমাগো আমলে আছিলো না। ফাল্গুন মাসের পরথম তারিখে ঘুরতাম, আর পয়লা বৈশাখে ঘুরতাম। আমেনা বেগম চুলে ফুল লাগাইতো। গ্যান্দা ফুল। বিশ্রী গন্ধ .. তাও তার পছন্দ। আমিও তারে ফুল কিন্না দিতাম। গোলাপ ফুল। দুইজন যাইয়া বাহাদুর শাহ পার্কে বইসা থাকতাম ... আহা রে কি দিন!

আরিশা তমালের দিকে তাকিয়ে ক্রুদ্ধস্বরে বললো, তুমি কি ওকে একটা ধমকও দিতে পারছো না! কি আশ্চর্য! আমার দিকে এরকম গাধার মতো করে তাকিয়ে আছো কেন ?

তমাল যণ্ত্রের মতো রিকশাওয়ালার দিকে তাকিয়ে বললো, এই, আপনি চুপ করেন। আমাদের সাথে কথা বলবেন না। আপনার গল্প শোনার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই।

তমালের হালকা ধমক রিকশাওয়ালাকে একেবারেই স্পর্শ করলো না। বরং ধমক শুনে সে হে হে করে প্রাণখোলা একটা হাসি দিয়ে দিলো। তমাল হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। যুবক বয়সী কারও ধমক শুনে কোনো রিকশাওয়ালা এভাবে হাসতে পারে এটা ওর ধারণাতে কখনোই ছিলো না। তমালের প্রচন্ড হতাশাবোধ হচ্ছে। আজকের ডেট-এর সবকিছু এখন ভন্ডুল হয়ে যাবে। শবে বরাতের রাতের ড্যাম্প বোমের মতো তমালের ঝাড়িটা একটা ড্যাম্প ঝাড়ি হয়েছে। ড্যাম্প ঝাড়ি ড্যাম্প বোমের থেকেও হতাশাজনক। এর মধ্যে যদি পাশে আরিশার মতো কোনো প্রেমিকা বসে থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। আরিশা নিশ্চই এই ড্যাম্প ঝাড়ি শুনে চরম বিরক্ত হয়ে গেছে। এখন এই ডেট-এর রিভাইভালের আর কোনো সুযোগ নেই।

তমালের ধারণা ঠিক ছিলো। আরিশা চরম বিরক্ত হয়েছে। ও তমালের দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, আহা রে আমার বয়ফ্রেন্ড! একটা ধমকও তুমি ঠিকমতো দিতে পারো না! এখন স্টাডের মতো ভান করে সিগারেট টানতে হবে না। এক্ষুণি সিগারেট ফেলে দাও।

আরিশার ঝাড়ি ড্যাম্প ছিলো না, বেশ কড়া ছিলো। তমাল হাতের সিগারেট ছুড়ে ফেললো। রিকশাওয়ালাটা তখনও হাসছে। তার হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে সে চরম আনন্দে আছে। তমাল মনে মনে তিনবার বললো, প্লিজ গড, আমাদেরকে তাড়াতাড়ি ফুলার রোডে নিয়ে যাও।

রিকশাওয়ালা হাসি থামিয়ে আপন মনেই বললো, আম্মাগো, গোস্বা হইয়েন না। ভাইজানের মনডা খারাপ হইবো। ভালোবাসার দিনে তার মনডা খারাপ কইরেন না আম্মা।

আরিশা বজ্রকণ্ঠে বললো, আর একটা কথা না, একদম চুপ। রিকশা রাখেন, এক্ষুণি রাখেন। আমরা নেমে যাবো।

রিকশাওয়ালাটা ঘাড় ঘুরিয়ে আরিশার দিকে স্নেহভরা দৃষ্টিতে তাকালো। এরপর আবার সামনে তাকিয়ে বললো, ও আম্মা, মনডা খারাপ কইরেন না। আমি অশিক্ষিত বুড়া মানুষ, মাথার ঠিক নাই। খালি প্যাচাল পারি। আমার কথা হুইনা মনডা খারাপ কইরেন না আম্মা।

আরিশা থমথমে মুখে বললো, আচ্ছা ঠিক আছে, মন খারাপ করছি না। আপনি রিকশা রাখেন, আমরা নেমে যাবো। আপনাকে পুরো ভাড়াই দেয়া হবে।

- আম্মাগো, আপনারে দেখলে আমার স্ত্রী আমেনার কথা মনে পড়ে আম্মা। আমেনা বেগম আপনার বয়সে দেখতে মাশাল্লাহ এমনই নূরানী আছিলো। চাচার কথায় দোষ নিয়েন না আম্মা। আমেনার কথা মনে হইলে আমি এমনই প্যাচাল পারি। বুড়া মানুষতো, মাথার ঠিক নাই। আপনে মনডা খারাপ কইরেন না আম্মা। আমি রিকশা রাখতাছি, আপনেরা মনডারে ঠান্ডা কইরা এরপর ঘুইরা বেড়ান। মনে দোষ রাইখেন না। মনে দোষ রাইখা সুন্দর সময় নষ্ট করা ঠিক না আম্মা।

তমালের মনে হলো আরিশা হঠাত করেই একটু চুপ হয়ে গেলো। ওর দৃষ্টিও হঠাত বদলে গেছে। ওর এতোক্ষণের বিরক্তিভরা চাহনীতে হঠাতই একটা মায়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। হয়তো রিকশাওয়ালার কোনো একটা কথা ওর মনটাকে ছুঁয়েছে। তমালের মনে হচ্ছে আমেনা বেগম নামের যেই মানুষটার কথা রিকশাওয়ালাটা বলছে, সে এখন আর তার পৃথিবীতে নেই। সেই আমেনা বেগমের সাথে আরিশার মিল পাওয়া যাচ্ছে এটা শুনেই হয়তো আরিশা একটু চুপ হয়ে গেছে। তমালের মনটা একটু খারাপ লাগছে। আরিশাকে দেখে মনে হচ্ছে ওর মনটাও তেমনই একটু খারাপ হয়ে গেছে। বেচারাকে ধমকাধমকি না করলেই হতো।

রিকশা থেমেছে ফুলার রোডের কাছেই। আর হয়তো দুই-তিন মিনিটের যাত্রা ছিলো। রিকশাওয়ালা রিকশা থামিয়ে গামছা দিয়ে মুখ মুছছে। তমাল রিকশা থেকে নামলো। ওর দিকে তাকিয়ে রিকশাওয়ালাটা একটা ক্লান্ত হাসি দিলো। তমাল এতোক্ষণে রিকশাওয়ালাটাকে মনোযোগ দিয়ে দেখলো। রোদে জরাজীর্ন চেহারা আর কাঁচাপাকা দাড়িগোঁফের কারণে বয়সের তুলনায় অনেক বেশী বুড়া লাগছে ওকে। চেহারায় বয়স্ক ভাব থাকলেও শক্ত সমর্থ শরীর। বয়স ষাটের নীচেই হবে। গায়ের রঙ কোনো একসময় বেশ গৌর ছিলো বলে মনে হচ্ছে। তবে রুক্ষতায় ভরপুর অবয়বের মধ্যেও ওর চাহনীতে একটা একাকীত্ম, অবসাদ আর ক্লান্তিভরা জীবনের ছাপ আছে।

তমাল ওর পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করার সময় রিকশাওয়ালাটা বললো, ভাড়া নিমু না ভাইজান। গরীবের দোষ মাফ কইরেন, আপনাগোর কাছ থেইকা ভাড়া নিমু না।

- কেন ?

রিকশাওয়ালাটা সহজ হাসি দিয়ে বললো, এমনেই। ভাড়া নিতে চাই না। আমারে মাফ কইরেন, মনে কুনো দোষ রাইখেন না। আম্মাজানরে দেইখা আমেনার কথা মনে হইছে। গেলোবছর তারে লইয়া পয়লা বৈশাখে রিকশা কইরা শেষবার ঘুরছিলাম। তিনি এখন আর আমার লগে নাই। আপনাগোরে দেইখা সেই রিকশা কইরা ঘুরানির কথা মনে হইছে। মনডা ভালো লাগতাছে। এই খুশি মনে ভাড়া নিলে আমেনা বেগম কষ্ট পাইবো।

আরিশা রিকশা থেকে নেমেছে। তমাল অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো আরিশার চোখেমুখে রাজ্যের বিস্ময়, আর ও সেই বিস্ময়ভরা দৃষ্টি নিয়ে রিকশাওয়ালাটার দিকে তাকিয়ে আছে। ততোক্ষণে রিকশাওয়ালাটার দৃষ্টিতেও বিষাদের কোনো একটা রঙ এসে গেছে। তার মুখের সেই সহজ হাসিটা হারিয়ে গেছে। হয়তো তার মৃত স্ত্রী আমেনা বেগমের কথা তার খুব বেশী করে মনে পড়ছে। হয়তো সত্যিই আরিশার সাথে আমেনা বেগমের কোনো মিল সে খুঁজে পেয়েছে। বিষাদের সেই দৃষ্টি নিয়ে সে আরিশার দিকে তাকিয়ে বললো, কি দেখেন আম্মা ?

- আপনি .... আপনাকে আমি আগে কোথাও দেখেছি!

- আমি তিরিশ বছর ধইরা এই শহরে রিকশা চালাই আম্মা, রাস্তাঘাটে কোথাও দেখছেন।

- না, রাস্তাঘাটে না .... অন্য কোথাও।

রিকশাওয়ালাটা রিকশায় উঠে বসলো। প্যাডেল চালানোর আগে বললো, অন্য আর কই দেখবেন আম্মা। আমরা গরীব মানুষ। গরীব মানুষরে কেউ কি আর মনে রাখে কন .... বেয়াদবী মাফ কইরেন আম্মা। মনে দোষ রাইখেন না।

তমালকে অবাক করে দিয়ে আরিশা রাস্তায় দাঁড়িয়েই তমালের হাত শক্ত করে ধরলো। এরপর কাঁপা কাঁপা অথচ খুব দৃঢ়কণ্ঠে রিকশাওয়ালাটাকে বললো, একটু দাঁড়ান, প্লিজ, একটু দাঁড়ান। আমার মনে পড়েছে আমি কোথায় আপনাকে দেখেছি। আমি আপনাকে টেলিভিশনে দেখেছি। আপনার স্ত্রী ... আমেনা বেগম ... আপনি তাকে খুঁজছিলেন, তাই না! আপনাকে আমি টিভি নিউজে দেখেছি .... ইউ টিউবেও দেখেছি .... আপনার চেহারা আমার মনে আছে .... আপনি গতবছর এপ্রিল মাসে সাভারে গার্মেন্টসের ভবন ধ্বসে যাওয়ার পরে সেখানে আপনার স্ত্রী আমেনা বেগমকে খুঁজছিলেন। আমেনা বেগম সেখানে কাজ করতেন ... তাই না! আপনার হাতে তার একটা ছবি ছিলো ... আপনি কাঁদতে কাঁদতে তার সেই ছবি টিভি ক্যামেরায় দেখাচ্ছিলেন ... আপনার কান্না দেখে আমিও অনেক কেঁদেছিলাম ... সেই ফুটেজ আমি ইউ টিউবে অনেকবার দেখেছি ... অনেক কেঁদেছি ... আপনি সেই মানুষ ... তাই না!

রিকশাওয়ালাটা কিছু বললো না। তার চোখে বিষাদের সেই রঙটা আরও গাঢ় হয়ে গেলো। কিন্তু সেই দৃষ্টি নিয়েই সে আরিশার দিকে তাকিয়ে সহজ ভঙ্গিতে হাসলো। তমাল হতভম্ব হয়ে রিকশাওয়ালাটার দিকে তাকিয়ে আছে। আরিশার কথা শুনে মনে হচ্ছে যে গত বছর এপ্রিল মাসে ভবনধ্বসের যেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সাভারে অনেক গার্মেন্টস কর্মীর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু হয়েছিলো, সেই দুর্ঘটনার একজন শিকার এই রিকশাওয়ালার স্ত্রী আমেনা বেগম। সেই দুর্ঘটনার পরে অনেকের মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাহলে কি আমেনা বেগমের মৃতদেহেরও সন্ধান পাওয়া যায়নি ?

আরিশা আবার কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বললো, আপনার স্ত্রী আমেনা বেগমকে কি আপনি খুঁজে পেয়েছিলেন ? তিনি কি বেঁচে আছেন ?

- জ্বি না আম্মা, আমি তারে আর খুইজা পাই নাই। আমি তাই জানিনা তিনি বাইচা আছেন কি নাই। রোজ রাইতে বাড়িতে গেলেই আমার মনে হয় তিনি কুনোদিন ফিরা আসবেন। দরজা খটখটাইয়া বলবেন, দরজা খুলো, আমি আসছি।

আরিশা কাঁদছে। তমালের হাত শক্ত করে ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে চুপচাপ কাঁদছে। তমাল মুগ্ধ হয়ে আরিশার কান্না দেখছে। আরিশার চোখে এখন একটা হারিয়ে যাওয়া দৃষ্টি। ও কান্নাভেজা কণ্ঠে বললো, আপনি তাকে সেখানে ভালোমতো খুঁজেছিলেন ?

রিকশাওয়ালাটা চোখ নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তার দিকে তাকিয়েই সে বললো, জ্বি আম্মা, আমি তারে অনেক খুঁজছি। কিন্তু তারে পাই নাই। মাফ কইরেন আম্মা। ভালোবাসার দিনে আপনাগোর মনে কষ্ট দিলাম। আমার মনে কুনো রাগ নাই। আল্লাহর মর্জি। আমেনা বাইচা থাকলে নিশ্চই বাড়িতে ফিরা আসবেন। আর না থাকলে ক্ষতি নাই ... যতোদিন বাচুম, তারে মনে কইরা বাইচা থাকুম। তারে ছাড়া আর বাচুমই কয়দিন!

তমাল বিড়বিড় করে বললো, আপনার বাসা কোথায় চাচা ? আপনার বাসায় আপনার ছেলেমেয়ে নেই ? আপনার সাথে আর কেউ থাকে না ?

রিকশাওয়ালা সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না। ভেজা কণ্ঠে বললো, আমি যাইগো আম্মা। আমেনার জন্য ফুল কিনা নিয়া যামু। আমার বাড়িতে তার লাগানো একটা লাউগাছ আছে। হেই গাছে ফুলটা লাগাইয়া রাখুম।

আরিশা চোখ মুছে বললো, আপনার কাছে আমেনা বেগমের ছবিটা এখন আছে ? আমাকে একটু দেখাবেন প্লিজ!

রিকশাওয়ালাটা তার শার্টের বুক পকেট থেকে একটা ছবি বের করে আরিশার হাতে দিলো। স্টুডিওতে তোলা একজন মাঝবয়সী মহিলার পাসপোর্ট সাইজের ছবি। সবুজ রঙের শাড়ির ঘোমটা দেয়া আর চোখে কাজল দেয়া খুব মায়াময় চেহারার একজন মহিলা। তমালের চোখ ভিজে আসছে। আরিশা ছবিটা ফিরিয়ে দিয়ে হালকা স্বরে বললো, আপনার স্ত্রী সত্যিই দেখতে আমার মতো। আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন।

- আমি করবো আম্মা। আমি যাইগো আম্মা। আপনারা ভালোমতো বেড়ান, সুন্দর সুন্দর কথা বলেন। আমি ফুল নিয়া আমেনার লাউগাছের কাছে যাই।

- শুনুন ... আপনি আমার এই ফুলগুলো কি আমেনা বেগমের জন্য নিয়ে যাবেন ?

- জ্বি না আম্মা। আমারে মাফ করবেন। আমেনার জন্য আমি নিজেই সবকিছু কিনতাম ... তা না হইলে তিনি গোস্বা করতেন। তিনি নিজেও অন্য কারও থেইকা কিছু নিতেন না। গেলোবছর পয়লা বৈশাখে তারে শেষবার ফুল কিনা দিছিলাম। আমার কিনা ফুল পাইয়া তিনি যেই হাসি দিতেন, হেই হাসি দেখলে আমি বেবাক কষ্ট ভুইলা যাইতাম। গেলোবছর পয়লা বৈশাখে তিনি আমারে পায়েস রান্না কইরা খাওয়াইছিলেন। তার কয়দিন পরেই সাভারে গিয়া তিনি আর ফিরলেন না। আমার মনে কুনো কষ্ট নাই আম্মা ... তিনি আমার কাছে নাই, এইটা আল্লাহর মর্জি। তয় গরীবের একটা কথা মনে রাইখেন আম্মা। ভাইজানের লগে রাগ কইরেন না, আর মনে কুনো রাগ-দোষ রাইখেন না। দুনিয়াদারীতে রাগের আর দোষের জায়গা নাই। আল্লাহ কখন কারে কোথায় ডাক দেন এক তিনিই জানেন। যাইগো আম্মা। আল্লাহ হাফেজ।

রিকশাওয়ালাটা চলে যাচ্ছে। তমালের হাত ধরে আরিশা দাঁড়িয়ে আছে। ওদের চারপাশে অসংখ্য সুখী মানুষ জোড়ায় জোড়ায় হাত ধরাধরি করে হেঁটে যাচ্ছে। ভালোবাসা দিবসে সবাই অনেক রঙে সেজেছে। সবার হাতে ভালোবাসার লাল গোলাপ, সবার মুখে হাসি। এদের সবার মাঝে আরিশা আর তমাল চোখভর্তি পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওরা চুপচাপ সেই রিকশাওয়ালার চলে যাওয়া দেখছে।

বিকালের আলো এখনও মিলিয়ে যায়নি। সেই আলোতেই আরিশা তমালের কাঁধে মাথা রাখলো। তমাল চোখ মুছলো। জীবনের সবচেয়ে ভালোলাগা মুহূর্তটা এখন আরও বেশী ভালো লাগছে। এর জন্য মনে মনে কাকে ধন্যবাদ দিতে হবে সেটা ও জানে, কিন্তু কিভাবে সেই ধন্যবাদটা দিবে সেটা ওর জানা নেই।

তমাল সেই জানা-অজানার মাঝে দুলতে দুলতেই মনে মনে বললো, জগতের সব আলো তোমার ভালোবাসার স্নিগ্ধ ছায়ার কাছে আত্মসমর্পণ করুক। তোমার ভালোবাসা কোটি প্রেমিকের নীরাজনে তুষ্ট হোক, ধন্য হোক। সেই ভালোবাসার ফল্গুধারায় স্নান করে আমাদের প্রেম হোক শুদ্ধ, আর আমাদের জীবন হোক পুণ্য।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সকাল রয় আরে বাহ! এ যেন প্রজাপ্রতি!! আমার কালো চোখ বিস্মিত!!
সকাল ... কি বলবো জানি না! আমি নিজেই তোমার লেখার ভক্ত! অনেক ভালো লাগলো মন্তব্য পড়ে। আমার ভবিষ্যতে চলচ্চিত্র বানানোর খুব ইচ্ছা, আর তুমি লেখালেখি আর ফটোগ্রাফির বস্ মানুষ। তোমার মতো বন্ধু বান্ধব হয়ে গেলে, আর তোমারও এসবে ঝোঁক থাকলে কখনও একসাথে কাজ করতে পারি .... কি বলো ! .... জয় হোক।
অবশ্যই একদিন ফিল্ম নিয়ে কাজ করবো। সাথে আছি
সুস্মিতা জামান খুব ভালো লাগলো গল্পটা পড়ে। এতো সুন্দর করে প্রেমকে উপস্হাপন করেছেন! খুব অবাক লাগলো যে আপনার গল্পটা এতো কম পয়েন্ট পেয়েছে। এই গল্প কারও হৃদয় ছুঁবে না এটা ভাবাই যায় না। আপনি অনেক সুন্দর লিখেন। কৈশোর সংখ্যায় আপনার লেখা পাইনি। আশাকরি আরও লেখা পাবো।
অসংখ্য ধন্যবাদ। কৈশোর সংখ্যায় লেখা দেয়ার সময় পাইনি, বইমেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কারও ভালো লাগলেই লেখা সার্থক, পয়েন্ট পাওয়ার প্রয়োজন নেই। মাইনাস পয়েন্ট না পেলেই হলো :) শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
রাজিয়া সুলতানা গভীর ভালবাসার হৃদয়ের মর্মস্পর্সী বাস্তবতার খুব খুবই ভালোলাগার একটি লেখা .সুসাগতম গল্পকবিতার ভুবনে ,অনেক শুভকামনা ও শুভাচ্ছা রইলো....আমার কবিতা পড়ার আমন্ত্রণ রইলো.....
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
অনেক ধন্যবাদ রাজিয়া, ভালো থাকবেন। আপনার কবিতা পড়েছি, খুবই ভালো লেগেছে।
মোঃ মহিউদ্দীন সান্‌তু হৃদয় ছোয়া গল্প, অসাধারন লিখেছেন। স্বাগতম গল্পকবিতায়, সবসময় আপনার লিখার আশাবাদ রাখলাম। ভালো থাকবেন, শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
অসংখ্য ধন্যবাদ সানতু, শুভকামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ওয়াহিদ মামুন লাভলু হৃদয় ছুঁয়ে গেল আপনার গল্প। হাহাকার, দুঃখ, প্রেম। অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ওয়াহিদ ভাই, অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ ভবনধ্বস, ঝড় , জলোচ্ছাস, ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে আমরা অনেক হারিয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছি । এখন গল্প পড়ি, টিভি দেখি অতপর সব ভুলে যাই । তবু প্রেম বেঁচে থাকে । বেঁচে থাক অনন্তকাল । খুব ভাল লাগলো আপনার কল্পকথন।
ভালো লাগেনি ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
অনেক ধন্যবাদ জালাল ভাই। আপনার মন্তব্য খুব ভালো লাগলো ... ভালো থাকবেন।
ভালো লাগেনি ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ঐশিকা বসু লেখাটা অত্যন্ত মনোগ্রাহী। পড়ে খুবই ভাল লাগল। আপনাকে গল্পকবিতায় স্বাগতম। শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
অসংখ্য ধন্যবাদ ঐশিকা, ভালো থাকবেন।
ভালো লাগেনি ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
এশরার লতিফ খুব ভালো লাগলো...গল্পকবিতায় স্বাগতম...কার্ডিফ থেকে মুভ করে ইউ সি এল চলে গ্যাছেন তাই না?
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
অনেক ধন্যবাদ এশরার। এখন ওয়েস্টমিন্স্টারে ইউনিতে, লন্ডনেই। কার্ডিফ থেকে মুভ করে বাংলাদেশের কাছে আসার একধাপ পার করেছি :)।
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মনোয়ার মোকাররম ভালো লাগলো .....
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

১৮ জানুয়ারী - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪